নিজস্ব প্রতিবেদক
ইসলামাবাদস্থ স্যার সৈয়দ মেমোরিয়াল সোসাইটির বৃহৎ ‘সিল্ক রোড কালচারাল সেন্টারে’ বাংলাদেশ হাইকমিশন আজ দিনব্যাপী অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩২’ আয়োজন করে। বাঙালি ধারায় আমন্ত্রিত অতিথিগণকে সম্ভাষণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং হরেক রকম সুস্বাদু বাংলাদেশি খাবার দিয়ে আপ্যায়ন ছিল এই উৎসবের মূল আকর্ষণ। এ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানস্থল আলোকসজ্জ্বা, ব্যানার, ফেস্টুন, ঘুড়ি, ফুল ও ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি লোকজশিল্প পণ্য দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়।
অতিথিবর্গ বাংলাদেশের নাচ ও গান, খাবার, লোকজশিল্প পণ্য, স্ট্যান্ডিজ ও ভিডিও ইত্যাদি অত্যন্ত আগ্রহসহকারে পরিদর্শন ও উপভোগ করেন। পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোঃ ইকবাল হোসেন খান ও হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যগণ অতিথিদের অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন করান।
পাকিস্তান সরকারের ফেডারেল তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব আমব্রিন জান প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানকে অলংকৃত করেন। অনুষ্ঠানটি হাইকমিশনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ হতে লাইভ স্ট্রিমিং করা হয়। এছাড়াও, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত/হাইকমিশনার ও কুটনীতিকগণ, ব্যবসায়ীবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, সঙ্গীতঙ্গ, চিত্রশিল্পী, প্রবাসী বাংলাদেশিসহ দেড় সহস্রাধিক অতিথি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত ও বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে হাইকমিশনার তারঁ বক্তব্যে বলেন যে, পহেলা বৈশাখ সম্প্রীতি ও মহামিলনের দিন। এ দিন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র বাঙ্গালি জাতি জেগে ওঠে নবপ্রাণে, নব অঙ্গীকারে। প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে সকলকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দু’দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করবে মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে পরিবেশিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ঐতিহ্যবাহী সাজপোশাকে সুসজ্জিত হয়ে শিল্পীবৃন্দ আবৃত্তি, নাচ ও গান পরিবেশন করেন।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের ছেলে মেয়েরা, বাংলাদেশ কমিউনিটির শিল্পীবৃন্দ ও পাকিস্তানি শিল্পীরা অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ নাচ ও গান পরিবেশন করেন। পাকিস্তানে সফররত বাংলাদেশী প্রতিনিধি দলের সদস্যরাও অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেন এবং গান পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠান চলাকালে ইসলামাবাদে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছিল। সব মিলিয়ে সকলে বৈশাখের আমেজ উপভোগ করেন। অনুষ্ঠান চলাকালীন আমন্ত্রিত অতিথিদের মাঝে বাংলাদেশি ফুসকা, মাঠা, লেবুর শরবত, তরমুজ, শশা, কাঁচা আম, পিচ ও লোকাট ফল পরিবেশন করা হয়।
এছাড়া, হাইকমিশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত দুধ লাউের ফিন্নি, আচার, গাজরের হালুয়া, ডিমের হালুয়া, গোলাপ পিঠা, নকশি পিঠা, পাটি সাপটা পিঠা ও তেলের পিঠা এবং পান্তা ভাতের সাথে আলু ভর্তা, বেগুন ভর্তা, বাদাম ভর্তা, টাকি মাছের ভর্তা, মশুর ডাল ভর্তা, লইট্টা সুটকি ভর্তা, কালিজিরা ভর্তা, চিংগী ভর্তা, চ্যাপ সুটকি ভর্তা, টমেটো ভর্তা, বরবটি ভর্তা, ধনিয়া পাতা ভর্তা ও করলা ভাজি পরিবেশন করা হয়। এছাড়াও, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী কাচ্চি ও খিচুড়ি দিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানের সার্বিক সাজসজ্জ্বা এবং সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা উপভোগ করেন এবং আপ্যায়নে সন্তোষ প্রকাশ করেন।